কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চলছে

কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চলছে

বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার খলিল রহমান।

কানাডা-বাংলাদেশ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন স্ট্রেংদেনিং কমার্শিয়াল রিলেশনসের ভার্চ্যুয়াল সভায় এ তথ্য জানান কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার খলিল রহমান। গতকাল সোমবার রাতে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি সঞ্চালনা করেন কানাডিয়ান হাইকমিশনের সিনিয়র ট্রেড কমিশনার অ্যাঞ্জেলা ডার্ক। আজ মঙ্গলবার এফবিসিসিআইয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কানাডার ভিসাপ্রক্রিয়ার জটিলতা একটি বড় বাধা উল্লেখ করে খলিল রহমান জানান, ঢাকায় কানাডীয় হাইকমিশনে দেশটির ভিসা অফিস স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশের ব্যাপারে বিজনেস কাউন্সিল অব কানাডার (বিসিসি) আগ্রহ রয়েছে। সংগঠনটি কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছে খাতভিত্তিক তথ্য জানতে চেয়েছে। যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশ ও প্রতিবেদনগুলো বিসিসির কাছে পাঠানোর প্রস্তাব করে হাইকমিশনার বলেন, কানাডা-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে এফবিসিসিআই বিসিসির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে পারে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে কো-চেয়ার ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, কানাডার উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য প্লাস্টিকশিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে।

কারণ অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজারের পাশাপাশি বিশ্ববাজারেও রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া তৈরি পোশাক, ওষুধ, প্রকৌশল ও অটোমোবাইল শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প হিসেবেও প্লাস্টিকপণ্যের বিশাল চাহিদা রয়েছে।

প্লাস্টিকশিল্পের বাজার ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিকপণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ। তিনি জানান, প্লাস্টিক খাতে ১২ লাখ মানুষ কাজ করেন।

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ রপ্তানি হচ্ছে ১০০ কোটি ডলারের পণ্য। এ খাতে বছরে গড়ে ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। প্লাস্টিকের ২৯টি উপখাতের সবই রপ্তানি সম্ভাবনাময়। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের দেওয়া নানা রকম নীতি–সহায়তার বিষয়টিও বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

সভায় কানাডা-বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ক্যানচ্যাম) বাংলাদেশের সভাপতি মাসুদ রহমান। তিনি বলেন, কানাডার উদ্যোক্তাদের জন্য অন্যতম বড় বিনিয়োগ ক্ষেত্র হতে পারে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে এ খাতের উন্নয়নে তাঁরা অংশ নিতে পারেন। এ জন্য দেশটির বিনিয়োগ ব্যাংক এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট কানাডা (ইডিসি) বাংলাদেশ ফান্ড গঠনের মাধ্যমে এ দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে।

এ ছাড়া মুক্তিবাণিজ্য চুক্তি, দ্বিপক্ষীয় এয়ার ট্রান্সপোর্ট চুক্তি, বিদেশি বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তি সই, ভাঙ্কুভারে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল অফিস ও চট্টগ্রামে কানাডার অনারারি কনসাল জেনারেল অফিস স্থাপন, কানাডার নাগরিকদের বাংলাদেশে অন অ্যারাইভাল ভিসা প্রদান, জিপিটির মেয়াদ বৃদ্ধি ও বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ১০০ একর জমিতে কানাডিয়ান অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক দৃঢ় করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন ক্যানচ্যামের সভাপতি মাসুদ রহমান।

Previous articleপোশাকের ন্যায্যমূল্য না পেলে পণ্য বিক্রি না করার আহ্বান
Next articleঝুলে আছে অনেক প্রস্তাব, সিদ্ধান্ত নিতেই বছর পার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here